মাদারীপুরে স্ত্রীর নামে জমি ক্রয় করে দখল যেতে পারছেন না এক বালু ব্যবসায়ী। অপর একটি পক্ষ জোরপূর্বক সেখানে দখল করে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাধা দেয়ায় তাকে হুমকিও দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা সালিশবৈঠক হলেও তা হয়নি সমাধান। শেষমেষ আদালতের দারস্থ হয় ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান সরদার। সোমবার দুপুরে সেখানে সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন আদালতের নিযুক্ত সার্ভেয়ার। উত্তেজনা থাকায় খবর দেয়া হয় থানা পুলিশকেও।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কালকিনি উপজেলার ১৪১নং ক্ষুদ্রচর মৌজায় সাড়ে ১২ শতাংশ জমি মুক্তা রায়হানার নামে ক্রয় করেন আন্ডারচর গ্রামের রহমান সরদার। পরে সেখানে বিভিন্ন প্রকার গাছপালা রোপন ও ঘর নির্মাণ করে বসবাস করেন তারা। এরপর ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর আন্ডারচর গ্রামের মাজিদ হাওলাদারের ছেলে আজিজুল হাওলাদার গং নিজেদের জমি দাবি করে সেখানে দখল নেয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে সেখান থেকে রহমান সরদারের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয় রহমান সরদার। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী। এতে আসামি করা হয় মাজিদ হাওলাদারের ছেলে আজিজুল, মালেক, বেল্লাল, সালেকসহ ৬জনকে। পরে আসামিরা স্বেচ্ছায় হাজির হলে জমি জোরপূর্বক দখল করবে না মর্মে অঙ্গিকার করলে জামিন দেয় আদালত। কিন্তু রহমানে স্ত্রীর নামে ক্রয়কৃত জমি এখনো দখলে আছেন প্রতিপক্ষ। বাদী রহমান সরদার তার স্ত্রীর নামে ক্রয়কৃত জমি ভোগদখলে না যেতে পারায় আইনের সহযোগিতা চেয়েছেন। এদিকে বিআরএস জরিপে ভুল হয়েছে মর্মে আদালতে সংশোধনী মামলা করেছেন মাজিদ হাওলাদারের পরিবার। প্লাল্টাপাল্টি মামলা আদালতে চলমান। এছাড়া আদালত থেকে নির্ধারিত সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জরিপ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। আদেশ বলে ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলেন সার্ভেয়ার মশিউর রহমান। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে খবর দেয় হয় কালকিনি থানা পুলিশকে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে উভয়পক্ষই ঘটনাস্থল থেকে সরে যান।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকবার সালিশবৈঠক বসায় মাদবররা। কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। শেষমেষ জমি নিয়ে বিরোধের সমাধান গড়িয়েছে আদালতে।
ভুক্তভোগী রহমান সরদার বলেন, ‘আমি সরকারের সবশেষ বিআরএস জরিপ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাছাইযাছাই করে স্ত্রীর নামে জমি ক্রয় করেছি। কিন্তু আমাকে ভোগদখলে থাকতে দিচ্ছে না। আমি কোন ঝামেলা চাই না। কাগজপত্র দেখে আদালত বা স্থানীয়ভাবে যে সিদ্ধান্ত দিবে তা আমি মেনে নিবো।’
এদিকে আজিজুল হাওলাদার বলেন, ‘এই জমি আমাদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া। এসএ রেকর্ডে তা পরিষ্কার রয়েছে। বিআরএস ভুল থাকায় আদালতে মামলা চলছে। এরইমধ্যে একটিপক্ষ রহমানের স্ত্রীর কাছে জমি বিক্রি করে দিয়ে চলে গেছে। আমরা আইনীভাবে মোকাবেলা করে এর সমাধান চাচ্ছি।’
আদালত থেকে নিযুক্ত সার্ভেয়ার মশিউর রহমান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা মেনে উভয়পক্ষের সাথে কথা হয়েছে। উপস্থিত স্থানীয় গণমান্যদের সাথেও কথা বলেছি। কাগজপত্র যাছাইবাছাইসহ প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমান আদালতে উপস্থাপন করা হবে। যাতে কোনপক্ষই তাদের নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়।’
মাদারীপুরের কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধ হওয়ায় উভয়পক্ষ আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছেন। সেখানে একটু উত্তেজনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে পরিস্থিতি এমনিতেই শান্ত হয়ে গেছে। এরপর পুলিশ সেখান থেকে চলে আসে।’
মাদারীপুরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ
কালকিনি
Keep Reading
পঠিত কলাম
সম্পাদক মন্ডলী
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: নাজমুল হক
নির্বাহী সম্পাদক: এমদাদ খান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আরিফুল রহমান মোল্লা
বার্তা সম্পাদক: রাশেদ কামাল
সহ-সম্পাদক: মো:সুলাইমান
মাদারীপুর জার্নাল অফিস:
পৌর মার্কেট, ২য় তলা,
নতুন শহর, মাদারীপুর।
ফোন: 01316100348
মেইল : nazmulhaque010183@gmail.com
© ২০২৫ অল রাইটস রিজার্ভড | মাদারীপুর জার্নাল